নাফাখুমের নাম প্রথম জানতে পারি টিঙ্কু চৌধুরীর “দেশের পথে”র ফেসবুক পাতায়, তারপর ইউটিউবে দেশের পথে’র ভিডিও দেখি। অনেকেই একে বাংলাদেশের নায়াগ্রা বলছিলেন। আগ্রহ তাই ক্রমশ আকাঙ্খার চূড়ায় উঠে যাচ্ছিলো দিন দিন। তাই এবারের ঈদের পর বেশ লম্বা ছুটির সুযোগ নিয়ে কয়েক বন্ধু মিলে বেরিয়ে পরলাম।
ঈদ পরবর্তী সময়ে টিকিটের অপ্রতুলতার জন্যে ঢাকা – বান্দরবান কোন টিকিট পাইনি আমরা। আট জনের দলের জন্যে ঢাকা – চট্টগ্রাম এবং তারপর চট্টগ্রাম – বান্দরবান বাস ধরতে হলো আমাদের। দিনটি ছিল ৩ সেপ্টেম্বর’ ২০১১। পরের দিন অর্থাৎ ৪ তারিখ দুপুর ১২টায় বান্দরবান পৌঁছে দুপুর আড়াইটায় থানচির টিকিট কাটলাম। এর আগের ভ্রমণগুলোতে থানচি রুটে আমাদের দলের কেউই যাইনি। তাই নীলগিরি পাশ কাটানোর সাথে সাথে পাহাড়সাড়ির সৌন্দর্য্যের প্রতি বিস্ময়বোধ আমাদের গ্রাস করলো! নীলগিরির চূড়া থেকে দক্ষিণের অতিদূরবর্তী যে দীর্ঘ পাহাড়সাড়ি দেখা যায়, সেটা পেড়িয়ে গিয়ে থানচি উপজেলার শুরু। পথে একস্থানে পাহাড় ধ্বসের জন্যে বাস বদল করতে হলো; এরপর আরো প্রায় ঘন্টা দেড়েক চলার পর থানচি। বাসে মোট সময় লাগে ৫ ঘন্টা।
বাস থেকে নেমে সিমেন্ট বাধাই করা সিড়ি বেয়ে ধূসর থানচির পাড়। জনপ্রতি নৌকা পাড়াপাড় ৫ টাকা। নৌকা থেকে নামার সাথে সাথে স্থানীয় এক ছেলে জুটে গেল; নিজেকে সানন্দে আমাদের গাইড হবার জন্যে উপস্থাপন করলো। সে রেমাক্রি, নাফাখুম, আন্ধারমানিক বা এমন এলাকাগুলোতে ঘুরাতে নিয়ে যাবার জন্যে নানান কথা বলছিলো বিরতিহীন। তবে আমরা তার কথায় পুরোপুরি মেতে না গিয়ে থানচি বাজার বিজিবি ক্যাম্পে গেলাম; নাফাখুম যাবার জন্যে বা প্রথম রাতটি থানচি বাজারে কাটাবার জন্যে করণীয় পরামর্শের জন্যে।
থানচি পৌছাবার পর আমাদের মতনই এক দল পর্যটক পেয়ে গেলাম, তারা সেদিনই নাফাখুম থেকে ফিরেছেন। তাদের দলনেতার পরামর্শে তাঁর পরিচিত দুজন মাঝিকে ঠিক করলাম। ঠিক হলো পরদিন সকালে রেমাক্রি রওনা দেবো; ঐ দিনই সন্ধ্যার মধ্যে থানচি ফিরবো। একজন গাইড ঠিক করলাম যে আমাদের সাথে থাকবে থানচি থেকে রেমাক্রি পর্যন্ত। সে আমাদের নিয়ে গেল মূল ঘাটের পাশেই অবস্থিত একটি বোর্ডিং হাউসে। ৫০০ টাকার বিনিময়ে দুটি ঘর ভাড়া নিলাম। রাতের খাবার এখানকারই একটি হোটেলে সারলাম। রাতে ঘুমাবার আগে ঘাটে বসে সাঙ্গুর পাড়ে, চন্দ্রালোকে আড্ডা দিলাম বেশ।
মূল থানচি বাজার বেশ বড়। উত্তর-দক্ষিণে এর ব্যাপ্তি বেশি। বাজারে দুটি খাবার হোটেল আছে। চারপাশের দোকানিরা তাদের দোকানের সামনের অংশে পসরা সাজায় আর পেছনের অংশে বাস করে। কয়েকটি দোকানে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকলেও রাতের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো হয় জেনারেটরের মাধ্যমে। জেনারেটরের মাধ্যমে রাত ১০-১০.৩০ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এই সময়ের মধ্যেই মোবাইল এবং ক্যামেরার ব্যাটারী চার্জ করে নিতে হবে। এখানে শুধুমাত্র টেলিটক এবং রবি’র নেটওয়ার্ক কাজ করে। থানচির আশেপাশে কিছুদূর গিয়ে রবি এবং তারপর আরো দূরে টেলিটকের নেটওয়ার্ক গায়েব হয়ে যায়। তাই আগে থেকেই সাবধান!
পরিকল্পনা মাফিক পরদিন সকাল ৮টায় আমরা বোটে করে রওনা দিলাম নাফাখুমের উদ্দেশ্যে। আগের রাত থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিলো, বোট ছাড়ার পরপর সেটা বেড়ে যাচ্ছিলো ক্রমশ দক্ষিণে এগোতে এগোতে। যতো এগিয়ে যাচ্ছিলাম ততোই সরু হচ্ছিলো সাঙ্গু নদী। দুপাশের পাহাড়গাত্র কাছাকাছি চলে আসছিলো। একটু একটু করে সমুদ্র সমতল থেকে উপরের দিকে উঠেছিলাম আমরা। সাঙ্গুর প্রতিটি বাঁকে স্রোতের তীব্রতা আর শিলা ডিঙিয়ে আসা জলের ফেনিল ধারায় আমাদের মুগ্ধতা বেড়ে যাচ্ছিলো প্রতিনিয়ত! বাঁকের বিপরীতে জেগে ওঠা অস্ফুট বালুচরগুলোও অসাধারণ; প্রত্যেকবারই মনে হচ্ছিলো নেমে গিয়ে তার নুড়ি পাথরের কিনারে দাঁড়াই, নিশ্চুপ হয়ে থাকি নদী আর নদীসমতল থেকে উঠে যাওয়া সুউচ্চ পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে!
প্রায় দেড় ঘন্টা উজানে চলার পর আমরা তিন্দু ঘাটে পৌছলাম। উজানে যাবার পথে ডান দিকে বেশ প্রশস্ত একটি বাঁকে তিন্দু বাজার অবস্থিত। পাড়ে নেমে সিড়ি ভেঙে ২০-২৫ ফিট উপরে উঠতে হলো। এখানে আমরা থামবো মিনিট বিশের জন্যে। এখানে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা ছিলো তবে আমাদের পরিকল্পনা এখানে সাময়িক বিশ্রামের পর আবারো রেমাক্রির পথে যাত্রা করা।
বিশ্রামের পর আবারও উজানের দিকে রওনা দিলাম। বোট ছাড়ার মিনিট পনের পর থানচি – রেমাক্রি নদীপথের সবচাইতে বিপদজনক তিনটি বাঁকের কাছে পৌছলাম। এখানে স্রোত এতটাই বেশি যে দক্ষতা আর অভিজ্ঞতা ছাড়া এগিয়ে যাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। দুটি বোটকে দেখলাম যাত্রীসহ দুই কিনারে থেমে থাকতে; তীব্র ধাক্কা সামলাবার চেষ্টা করে মূল স্রোতে ফিরে আসার চেষ্টা করছে! এই বাঁকগুলো পেড়িয়ে আরো মিনিট দশেক পর “বড় পাথর” পৌছলাম। প্রচণ্ড স্রোতের বিপরীতে বিশাল বিশাল পাথরের পাশ কেটে উজানে যাওয়া বেশ উত্তেজনাকর এবং ঝুঁকিপূর্ণ! আমাদের দক্ষ মাঝি সেটা করছিলো অবলীলায়! “বড় পাথর” হলো সাঙ্গু নদীর এমন একটি স্থান যেখানে বাম পাশের (থানচি-রেমাক্রি পথে) প্রায় ৭৫০-৮০০ ফিট উঁচু পাহার থেকে বিশাল বিশাল পাথর খণ্ড ধ্বসে পড়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এর মধ্যে সাঙ্গুর ওপর পতিত সবচেয়ে বড় পাথরটিকে স্থানীয়রা “রাজা পাথর” বলে ডাকে।
“বড় পাথর” পেড়িয়ে আরো ঘন্টাখানেকের পর প্রশস্ত রেমাক্রিখুমের সম্মুখে পৌছে গেলাম। এর পরই রেমাক্রি বাজার। রেমাক্রি ঘাটে নামার সময় আরো দুটো বোট আমাদের অতিক্রম করে চলে গেল সাঙ্গু ধরে আরো ভেতরে; ঐ পথে আন্ধারমানিক যাওয়া যায়। ঘাটেই আমাদের থানচি গাইডের পরিচিত একজন স্থানীয় গাইড পেলাম যে আমাদেরকে নাফাখুম নিয়ে যাবে। সেই গাইডকে অনুসরণ করে তাঁর বাসায় গিয়ে উঠলাম। এখানে বিশ্রাম নেব আধা ঘন্টা। বিজিবি এবং স্থানীয় হেডম্যানের চুক্তি অনুযায়ী এখান থেকে অন্যত্র যেতে হলে স্থানীয় গাইড নিতে হবে। নতুন এই গাইডের পারিশ্রমিক ৫০০ টাকা ঠিক হলো। এখানকার বিজিবি ক্যাম্পে আমাদের সবার নাম, ঠিকানা আর মোবাইল নম্বর জমা দিয়ে, গাইডের ঘরে সবার মালামাল রেখে রওনা দিলাম নাফাখুমের উদ্দশ্যে।
এখান থেকে নাফাখুম পর্যন্ত পুরো পথটুকু হেঁটে যেতে হবে। শুরুতেই দুটো পাহাড় টপকালাম। দ্বিতীয় পাহাড়ের চূড়া থেকে রেমাক্রি খালের একাংশ চোখে পড়ে। উপর থেকে সেটা দারুন একটা দৃশ্য! তারপর আরো মিনিট পনের হাঁটার পর নাফাখুমের জলধারার যে ঝিরি অর্থাৎ রেমাক্রি খাল, সেটা পার হতে হলো। পানি ঠান্ডা আর স্রোতও বেশ। ওখানে পানির গভীরতা তখন ৪ ফিটের মতন ছিলো; পায়ের কাছাকাছি দেখা যায় না বলে সাবধানে, প্রতি পদক্ষেপ মেপে, ধীরে ধীরে পেরিয়ে গেলাম আমরা। স্রোত বেশি হলে লাঠি বা দড়ির সাহায্য নিয়ে একে অপরের সাথে মানব বন্ধন তৈরি করে পার হওয়া যেতে পারে। সেই উদ্দেশ্যে রেমাক্রি বাজার থেকে বেশ লম্বা দড়ি কিনে নিয়েছিলাম। এরপর আবার হন্টন। ডানে-বায়ে সুউচ্চ পাহাড় রেখে আমরা হেঁটে যাচ্ছিলাম নদী উপত্যকা দিয়ে। কিছুক্ষণ পরপর থেমে দাড়াচ্ছিলাম আমি; নিশ্চুপ হয়ে দেখছিলাম চারপাশের অপার সৌন্দর্য্য। সামনে থেকে বাঁক নিয়ে এসে নদীটা হারিয়ে গেছে আরেক বাঁকে, আরেক পাহাড়ের আড়ালে। পুরো দৃশ্যপটে জল, পাহাড় আর আকাশের অংশগ্রহণে চলছে সৌন্দর্য্যের প্রতিযোগিতা। মৃদু বাতাস আর জলধারার কুলকুল শব্দের সাথে চারপাশে বেশ উপভোগ্য একটা নির্জনতা ছেয়ে আছে!
আমাদের পথ একটু একটু করে কমে আসছিলো আর তার সাথে সাথে পথের প্রকৃতিও পালটে যাচ্ছিলো। কোথাও হাঁটছিলাম পাহাড়ের একদম শরীর ঘেঁষে যেখানে পা ফেলার জন্যে সামান্য ফাঁকা জায়গা আর অন্যপাশে খাঁদ নেমে গেছে ১৫-২০ ফিট নিচে বড় পাথর পড়ে থাকা খালে। কোথাও হাঁটছিলাম পিচ্ছিল পাথরের ওপর দিয়ে, পা হড়কে গেলে সোজা তীব্র স্রোতের খালে গিয়ে পড়তে হবে। আবার কখনো এগুতে হচ্ছিলো নদীর পাড় ঘেষে নুড়ি পাথর, বালু জমে থাকা পথ ধরে। এই খালটা মোট তিন কিস্তিতে এপাড়-ওপাড় করতে হয়। তৃতীয় বারে পানি হলো বুক সমান আর তার সাথে প্রচন্ড স্রোত। পায়ের নিয়ে পিচ্ছিল উঁচু নিচু পাথর আরো কঠিন করে দেয় ব্যাপারটাকে।
দুইবার বিশ্রাম নিয়ে প্রায় আড়াই ঘন্টা হেঁটে নাফাখুমের কাছে পৌছলাম আমরা। এর মধ্যে দুটি দলের আরো কয়েকজন পর্যটকদের পেলাম। সবারই এক কথা, “নিজের চোখে না দেখলে মিস করবেন”। সিকি মাইল দূর থেকেই নাফাখুমের জল পতনের শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। জলধারার পাড় থেকে কিছুটা উপরে উঠতে হলো। অতি উত্তেজনাতেও সাবধানে হাটতে হচ্ছিলো কারণ এখানে পাথর বেশ পিচ্ছিল। যখন নাফাখুমের কাছাকাছি পৌছলাম তখন সবাই ক্লান্তি ভুলে হতবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম এই অভাবিত সৌন্দর্য্যের দিকে! প্রচণ্ড গর্জনে পানি নেমে আসছে, পতিত হচ্ছে ফিট বিশেক নিচে। ঝিরিঝিরি বাতাসে কুয়াশার মতোন জলকণা চারিদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে। কাছাকাছি যেতে ভয় লাগে আবার দূরেও থাকতে পারি না; পাথর শ্যাওলা ধরা এবং খুব পিচ্ছিল জেনেও! স্থির, নেশাগ্রস্ত হয়ে একটানা তাকিয়ে দেখছি।
আমরা বেশ পশ একটা সময়ে এখানে পৌছেছি; নাফাখুমের পানি শীতের জলস্বল্পতার দরুন কমে যায়নি আবার বৃষ্টিস্নাত হয়ে টইটুম্বুর হয়নি। বাম পাশ দিয়ে আরো কিছু দূর গিয়ে নাফাখুমের পেছনে পৌছে যাওয়া যায়। সেখান থেকে এর সৌন্দর্য্য একদম ভিন্ন রূপে পাওয়া যায়। শীতের সময় পানি কমে গেলে এর বাম দিকে দ্বিতীয় ধাপের নিচে প্রাকৃতিক গর্তটি দৃশ্যমান হয়। তখন খুব সহজেই সেখানে নেমে যাওয়া যায়। বছর দেড়েক আগে আলোচনায় আসা এই ঝর্ণার কাছে খুব কম পরিমাণ পর্যটক এসেছে এর মধ্যে। ঘন্টা খানেক ছিলাম সেখানে, আসাধারণ একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে আবার ফিরতি পথে রওনা দিলাম। এমন একটা বৃহৎ প্রাপ্তির পর অল্প চেনা পথটাও তখন সহজ আর নখদর্পণে বলে মনে হচ্ছিলো!
থানচি বা নাফাখুমের পথে সম্ভাব্য খরচ এবং ব্যবস্থা এমন-
> ঢাকা – বান্দরবান
বাস; ৩০০-৪০০ টাকা; ৭-৯ ঘন্টা
> বান্দরবান – থানচি
বাস; ১৬৫ টাকা; ৫-৬ ঘন্টা
জীপ; ৪০০০-৫০০০ টাকা; ৪-৫ ঘন্টা
> সাঙ্গু নদী পারাপার; জনপ্রতি ৫ টাকা
> ঘর ভাড়া
প্রতি রুম; ২০০-৪০০ টাকা
প্রতি বেডিং; ৫০-৭০ টাকা প্রতি রাত
> খাবার
গড়পরতায় নাস্তা ৫০-৮০ টাকা; দুপুর এবং রাতের খাবার ৭০-১২০ টাকা। হোটেলে আগেই কথা বলে রাখা ভালো। এতে প্রাপ্তির উপর নির্ভর করে ইচ্ছে মতোন মাছ, মাংস, সবজি বা ডিমের ব্যাপারটি নিশ্চিত করা যায়।
> থানচি গাইড
বিজিবি কর্তৃক এখনো গাইড ভাড়া নির্দিষ্ট করা হয়নি তাই গাইডের সাথে কথা বলে ঠিক করে নেয়া ভালো। দিন প্রতি ৩০০-৫০০ টাকা ভাড়া তবে একাধিক দিনের পরিকল্পনায় পুরো প্যাকেজ ঠিক করে নেয়া যেতে পারে।
> বোট
গন্তব্যের দূরত্বের উপর নির্ভর করে ৩০০০-৭০০০ টাকা ভাড়া; এক্ষেত্রে ভ্রমণ পরিকল্পনায় যদি তিন্দু বা রেমাক্রিতে রাত কাটাতে হয় তবে মাঝি/বোট আপনাদের সাথে থাকবে। সেটা বিবেচনায় রেখেই বোট ভাড়া করতে হয়। শীত মৌসুমে ঠ্যালা নৌকার জন্যে প্রতি দিনের ভাড়া ১০০০ টাকা।
> তিন্দুতে থাকার ব্যবস্থা
এখানে মারমাদের বাস। এই আদিবাসীদের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। তবে যে বাড়িতে আপনি থাকবেন, সেখানেই আপনাকে খাবার খেতে হবে। খাওয়ার খরচ তিন বেলায় ২০০ টাকা। এক্ষেত্রে থাকার জন্যে কোন খরচ দিতে হবে না। মোবাইল নেটওয়ার্ক আছে শুধুমাত্র টেলিটকের। মোবাইল চার্জ দেবারও ব্যবস্থা আছে।
> রেমাক্রি
রেমাক্রি চেয়ারম্যানের নাম আফ্রো মং; তাঁর একটা রেস্ট হাউজ আছে এখানে, একটা পাহাড়ের মাথায়। এক রুমের ভাড়া ৫০০ টাকা, ১০-১২ জন থাকা যায়। রেমাক্রি বাজারে খাবার খরচ জনপ্রতি ৬০-৭০ টাকা। আগে থেকে কথা বলে দাম ঠিক করে নেয়া ভালো। গাইডের ভাড়া ৩০০-৫০০ টাকা।
শীতের সময় থানচি থেকে বোট ছাড়াও হেঁটে রেমাক্রি, নাফাখুম যাওয়া যায়। তখন থানচি থেকে রেমাক্রি পৌঁছতে ৫-৬ ঘন্টা সময় লাগে। “বড় পাথর” স্থানটি ভালো করে ঘুরে দেখা যায় কারণ তখন স্রোত খুব একটা থাকে না। রেমাক্রি থেকে নাফাখুম যেতে দুটো রুট আছে। একটা রেমাক্রি বাজারের আগে রেমাক্রিখুমের মুখ থেকে আর অন্যটা রেমাক্রি বাজার থেকে দুটো পাহাড় ডিঙিয়ে তারপর রেমাক্রি খালের পাড় ধরে। প্রথম ক্ষেত্রে রেমাক্রি খাল পেরোতে হবে চার বার, দ্বিতীয় ক্ষেত্রে তিন বার। সময়ের পার্থক্যে ৩০-৪০ মিনিট বেশি লাগবে প্রথম রুটে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন