ব্যানার ছবিঃ

ব্যানার ছবিঃ আন্তর্জাল

বৃহস্পতিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১২

রাতারগুল জলাবন বা Swamp Forest

গত সপ্তাহে, আমরা মোট বারো জন বন্ধু মিলে সিলেটে অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন বা সোয়াম্প ফরেস্ট, রাতারগুল গিয়েছিলাম। পৃথিবীর খুব অল্প কিছু মিঠাপানির জলাবনের মধ্যে এটি একটি। সিলেট শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জলাবনে বেশ কিছু প্রজাতির উদ্ভিদ এবং প্রাণীর বসবাস। ডিঙি নৌকা নিয়ে বনে প্রবেশের কিছুক্ষণের মধ্যেই হেড়ে গলার, চরম বিরক্তিকর চিৎকার শুনে ভ্রু কুঁচকে গিয়েছিলো আমার। অর্থহীন আচরণের জন্যে মানুষকে টেক্কা দেয়া সহজ নয় 

বনের মূল উদ্ভিদের মধ্যে হিজল, করচ আর বরুন উল্লেখযোগ্য। স্তন্যপায়ীদের মধ্যে রয়েছে বেজী ও বানর; সাপ ও গুইসাপসহ কয়েক প্রজাতির সরিসৃপ; পাখিদের মধ্যে রয়েছে সাদা বাজ, শকুন, চিল, পানকৌড়ি, মাছরাঙা, সাদা বক, কানা বক; মাছেদের মধ্যে রয়েছে রুই, কাতলা, কালবাউশ, আইড় এবং আরো কিছু প্রজাতি।

এই ভিডিওতে ছবির পাশাপাশি আমার দলের কয়েকজনসহ অন্যান্য পর্যটকদের হেড়ে গলার চিৎকারের জন্যে দুঃখ প্রকাশ করছি। স্বকীয়তা বজায় রাখার জন্যে শব্দ বাদ না দিয়ে ভিডিওটি তুলে দিলাম।

কিভাবে এখানে যাওয়া যাবে তা আলাদা করে বলছি না, সংযুক্ত লিঙ্কগুলো থেকে সে তথ্য পেয়ে যাবেন!
ধন্যবাদ! 


উইকিপিডিয়া
http://bn.wikipedia.org/wiki/রাতারগুল_জলাবন

ট্যুরিজম বাংলাদেশ (ফেসবুক)
https://www.facebook.com/media/set/?set=a.478298968860910.111044.282078708482938&type=1

কালের কন্ঠ
http://www.kalerkantho.com/index.php?view=details&type=gold&data=Cook&pub_no=626&cat_id=3&menu_id=22&news_type_id=1&index=0&archiev=yes&arch_date=28-08-2011#.UIhO5IbxRYE

মঙ্গলবার, ২৮ আগস্ট, ২০১২

তুমি একটি অলিখিত কবিতা


তুমি একটি অলিখিত কবিতা,
নিমীলিত দৃষ্টি, চেপে রাখা অশ্রু,
আগুন হয়ে জ্বলন্ত সবিতার
মতো উত্তপ্ত। অবাধ্য হাওয়ার শুশ্রুষা।

তুমি মুগ্ধ ছলোচ্ছল, অস্থির নদী,
হিজলের আত্মবিশ্বাস, জারুলের রঙ,
সরোবরের সাথে পাথরের সন্ধি,
কুহেলিকাময় অরণ্যের গুল্ম

তুমি গহীন পাহাড়ের প্রান্ত,
ক্রমশ নীলাভ হওয়া চূড়া,
অস্ফুট জলধারার শীতলতা,
রাতজাগা পতঙ্গের কোরাস।

তুমি ছুটে যাওয়া তারাদের আলো,
বেতবন ধুয়ে নেয়া জ্যোৎস্না,
অশুত্থের ভয় মাখা নড়ন,
শেষরাতের আবছা আলোর কুহক।

তোমার একটানা এড়িয়ে চলা পথে,
কবিতাগুলো দৃষ্টিহীন, অনুভূতিহীন হয়ে আছে।
আঁচল রাঙানো ধুলোর আস্তরণে,
রঙিন ফুল ফ্যাকাশে হয়ে আছে।
হেসে ওঠার প্রয়োজনে কিছু কাব্য
অভ্যুক্ত, অসাড় হয়ে আছে...


বৃহস্পতিবার, ৭ জুন, ২০১২

"ভর্তা উৎসব ১৪১৯", টোটেম একাডেমী


ফুল, ফল, পিঠা-পুলি, পাখি, বৃক্ষ এমন অনেক বিষয়ে প্রতি বছর বাংলাদেশের নানা স্থানে নানা ঋতুতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এক বা একাধিক দিনব্যাপী উৎসব এবং মেলা। এসব মেলা বা উৎসবে আয়োজক ছাড়াও সর্বসাধারণের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হয়ে থাকে। বাঙালিয়ানা চর্চার ধারাবাহিকতা আর ক্ষেত্র সৃষ্টিই সাধারণত এসব উৎসবের মূল উদ্দেশ্য। বাঙালী ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর সম্পৃতির অনুপ্রাসে বাঙলায়ন ফাউন্ডেশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান, টোটেম একাডেমী গত ৪ জুন পালন করেছে “ভর্তা উৎসব ১৪১৯” যা তাঁরা গত সাত বছর ধরে নিয়মিত আয়োজন করছেন।  

পুরান ঢাকার একটি অন্যতম শিক্ষা ও সংস্কৃতি কেন্দ্র হলো টোটেম একাডেমী। এর শিক্ষার্থী ছাড়াও তাঁদের অভিভাবক, এলাকাবাসী, পরিচিতজন- সবার জন্যে নিজের পছন্দমতো যে কোন এক বা একাধীক প্রকার ভর্তা তৈরি করে এই উৎসবে অংশগ্রহণের সুযোগ ছিলো। ভর্তার স্বাদ নয় বরং পরিবেশনের সৌন্দর্য্যের ওপর নির্ভর করে পুরষ্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিলো এবারো।

সকাল ১১টা থেকেই ধীরে ধীরে টোটেম একাডামীর শিক্ষার্থী, অভিভাবক, অতিথি আর আয়োজকদের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে ওঠে সূত্রাপুর কমিউনিটি সেন্টার। একের পর এক আসতে থাকে হরেক রকম ভর্তার রঙ-বেরঙের থালা, বাটি, ট্রে। আলু ভর্তা দিয়ে কেউ গাড়োয়ানসমেত গরুর গাড়ি তৈরি করে তা সাজিয়ে এনেছেন, কেউ বা পুর করেছেন করলা দিয়ে কুমির তৈরি করে, আরেকজন এসেছেন ধুন্দলের মধ্যে ধনে পাতার ভর্তা নিয়ে। দারুন দৃষ্টিকাড়া ভর্তার পরিবেশনে দীর্ঘায়িত হচ্ছিলো ভর্তার সারি। ১২৬ জন অংশগ্রহণকারী মোট ১০৬ ধরণের ভর্তা উপস্থাপন করেছিলেন! কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ভর্তার নাম বলা যেতে পারে, যেমন, ইলিশ মাছ, গরুর মাংস, খাসীর মাংস, মুরগীর মাংস, ইলিশ মাছের কানসা, তরমুজের খোসা, এমন কি চীনা বাদামের ভর্তাও ছিলো। অংশগ্রহণকারী সবগুলো ভর্তার পরিপূর্ণ একটি তালিকা এই লেখার শেষে সংযোজিত হয়েছে।

টোটেম একাডেমীর পরিচালক, শফিক মনজু বললেন, বাঙালীরা অনেক কাল ধরেই খাদ্যাভ্যাসে ভর্তা গ্রহণ করে আসছে যদিও বাঙালী অধ্যুষিত স্থানগুলোতে রয়ে যাওয়া কয়েকশ’ প্রকার ভর্তার পরিচিতি নিয়ে আলাদা করে কোন আয়োজন বা উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আমাদের উদ্দেশ্য পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশে নববর্ষ বরণের মতোই প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তিতে ভর্তা খেয়ে বিগত বছরকে বিদায় দেয়া।

এবারের ‘ভর্তা উৎসব’ ১৪১৯’এর প্রধান অতিথি ছিলেন লেখক ও শিক্ষাবিদ হায়াৎ মামুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটন, লেখক আহমদ মজহার, কথাশিল্পী পারভেজ হোসেন, ফজলুল হক মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ অশোক কুমার সাহা, গেণ্ডারিয়া কিশলয় কঁচিকাঁচার মেলার পরিচালক শফিউর রহমান দুলু, চ্যানেল আই’এর প্রযোজক, সঙ্গীত শিল্পী পুনম প্রিয়ম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান ছাড়াও বিজয়ী শ্রেষ্ঠ ভর্তা তৈরিকারক, পাতা সংগ্রাহক, টোটেম একাডেমীর এ বছরের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করা হয়।

টোটেম একাডেমী ভর্তা উৎসব ছাড়াও বাৎসরিকভাবে ভাষা উৎসব, পাতা সংগ্রহ উৎসব, গণিত উৎসব উদযাপন করে আসছে।


“ভর্তা উৎসব ১৪১৯’র ভর্তা তালিকা”

  • মাংস
খাসির মগজের ভর্তা
গরুর মাংসের ভর্তা
গরুর মগজের ভর্তা
মুরগীর মাংসের ভর্তা
কবুতরের মাংসের ভর্তা

  • মাছ
ইলিশ মাছের ভর্তা
টাকি মাছের ভর্তা
চিংড়ির ভর্তা
চাঁদা মাছের ভর্তা
ফলি মাছের ভর্তা
ইলিশ মাছের কানসা ভর্তা
চেউয়া মাছের মাথার ভর্তা
মাশরুম ভর্তা
হাঁসের ডিম ভর্তা
পুঁটি মাছের ভর্তা
কাইক্কা মাছের ভর্তা
রুপচাদার ভর্তা
ডিম ভর্তা
চিংড়ি ভর্তা
টাকি মাছের ভর্তা
রুই মাছের ডিমের ভর্তাবজুরি মাছের ভর্তা
বেলে মাছের ভর্তা
ডিমের কুসুম ভর্তা
চিংড়ি মাছের মাথার ভর্তা

  • শুটকি
কাঁচকি শুটকির ভর্তা
চিংড়ির শুটকির ভর্তা
চ্যাঁপা শুটকির ভর্তা
চাঁদা মাছের শুটকির ভর্তা
লইটা শুটকির ভর্তা
কাচাঁ মরিচের চ্যাঁপা শুটকি ভর্তা
শুকনা মরিচের চ্যাঁপা শুটকি ভর্তা
ধনেপাতা দিয়ে চ্যাঁপা শুটকি ভর্তা
বাগার দিয়ে চ্যাপা শুটকি ভর্তা
রুপচাঁদা শুটকির ভর্তা
কাচকি শুটকি ভর্তা
কাইকা শুটকির ভর্তা

  • সবজি
আলু ভর্তা
ডাল ভর্তা
ডিম ভর্তা
ডাঁটা শাকের ভর্তা
কালিজিরা ভর্তা
কুমড়ার খোসার ভর্তা
কাঁঠাল বিচির ভর্তা
কাঁচকলা ভর্তা
করলা ভর্তা
কচু ভর্তা
কঁচু শাক ভর্তা
কলার থোর ভর্তা
কাঁচা মরিচ ভর্তা
ধনেপাতা ভর্তা
টমেটো ভর্তা
থানকুনি পাতার ভর্তা
রসুন ভর্তা
ঢেঁড়শ ভর্তা
তিল ভর্তা
পেয়াজ ভর্তা
পটল ভর্তা
পাট শাকের ভর্তা
বরবটি ভর্তা
বিলাতী ধনেপাতা ভর্তা
বেগুন ভর্তা
বাদাম ভর্তা
লাউয়ের খোসার ভর্তা
লাউপাতার ভর্তা
সরষে ভর্তা
সিম ভর্তা
সাজনা পাতার ভর্তা
শুকনা মরিচ ভর্তা
খেসারি ডালের ভর্তা
তরমুজের খোসার ভর্তা
তরমুজের বিচি ভর্তা
বাগার দিয়ে আলু ভর্তা
ধুন্দুল ভর্তা
মিষ্টি কুমড়ার দানা ভর্তা
ধনেপাতার + তেতুলের ভর্তা
পেঁপে ভর্তা
জালি কুমড়ার খোসার ভর্তা
কহি ভর্তা
রসুন ভর্তা
টমেটো ভর্তা
পটলের খোসা ভর্তা
বাদাম ভর্তা
কাজু বাদাম ভর্তা
কাঠালের ভর্তা
কাঁচ কলা ভর্তা + ডিম ভর্তা
মিষ্টি কুমড়ার দানা ভর্তা
বাগার দিয়ে আলু ভর্তা
কাঠাল বিচি ভর্তা
ডিম ধনেপাতা ভর্তা
তিশির ভর্তা
কাঁচা কাঁঠালের ভর্তা
পুইশাকের ভর্তা
পিয়াজ রসুনের ভর্তা
করলা ভর্তা
কুমড়ার বিচি ভর্তা
ছোলার ভর্তা

সাক্ষাৎকারের লিঙ্ক




শুক্রবার, ১১ মে, ২০১২

বীজ


পথের শেষে বুনিস তোর বীজ,
জল দিস নিয়মিত।
থাকিস না বর্ষার আশায়
অথবা মোড়ল বাড়ীর আদরের মেয়ের জন্য!

জাম গাছের পাশ কাটিয়ে গেলে ওই মোড়লের উঠোন-
সালিশ বসে, দোররা মারে, ক্রন্দনও হয় কিছু।
থেকে থেকে কৌতুক ভেসে আসে প্রায়ই।
তবু তোর বীজে জল দিস নিয়মিত,
অথবা রক্তাশ্রু।
দিন-মাস-বছর পর
মোড়লের পায়ে বিষফোড়া হয়ে বেড়ে উঠবে তা...

বুঝেসুজে বুনিস তোর বীজ,
যত্ন করিস নিয়মিত।
পোয়াতী হলে মোড়লের মেয়ে, রাখিস না ওখানে, নিয়ে তুলিস ঘরে,
ওখানে স্বপ্ন ভাঙে প্রতিদিন,
বুঝিবা নতুন স্বপ্ন দেখার আকাঙ্খায়।

-- নভেম্বর' ২০০৮